করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল হিসেবে ধরা হয় চীনকে। বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসের তান্ডবে প্রায় ২ বছর বিপর্যস্ত ছিল পৃথিবী। দীর্ঘদিন পরে যখন সবাই আস্তে আস্তে ঘুরে দাড়াতে শুরু করল তখন আবার এল করোনার থাবা। এবারো চীনে। কিন্তু এবার করোনার নতুন উপধরণ BF.7 দিয়ে। এটা ওমিক্রণের একটি উপধরণ হিসেবে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এর সংক্রমণ ক্ষমতা পমিক্রণের চেয়েও চার গুণ বেশি বলে জানা যাচ্ছে।
এরই মধ্যে ভারতসহ ৯১টি দেশে অতিসংক্রামক এ ধরনে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে। ভাইরাসটি প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশ আন্তর্জাতিক চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ ও নমুনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করছে। ভারতে শনাক্ত প্রথম 'ডেলটা' ধরনের অভিজ্ঞতা বলা যায় থেকে বাংলাদেশে আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বন প্রয়োজন। কারণ, পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায় ভারতে করোনা প্রাদুর্ভাবের অল্পবিস্তর পরেই বাংলাদেশে ভয়াবহ আকার নেয়। ভারতে শনাক্ত ডেলটা ধরনের ক্ষেত্রে যেমনটি হয়েছিল। এ জন্য এবার প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে থাকা সীমান্তে কঠোর নজরদারি থাকা প্রয়োজন। এরই মধ্যে বিএফ.৭ উপধরন চীন-ভারতসহ যেসব দেশে শনাক্ত হয়েছে, তারা বিমান, স্থলবন্দর বা দেশের সব প্রবেশপথে স্ট্ক্রিনিং জোরদার করেছে। পাশাপাশি কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন ব্যবস্থা জোরদারের সুপারিশ করেছে। বাংলাদেশকেও এসব পদক্ষেপে মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।
ইতোমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) চীন-ভারতের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে উপধরনটি প্রতিরোধে ব্যাপক হারে টিকাদানের ওপর জোর দেবার জন্য গুরুত্ব আরোপ করেছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ইতোমধ্যে পরামর্শ দিয়েছেন, করোনার নতুন উপধরন আসার পর প্রতিকারের চিন্তা না করে, এটি প্রতিরোধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এ জন্য সময় নষ্ট না করে এখনই ধাপে ধাপে পদক্ষেপের কর্মকৌশল প্রণয়ন করতে হবে।
তবে আশা কথা এই যে বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে প্রতিরোধের জন্য বেশ কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সেকেন্ড বুস্টার ডোজের (চতুর্থ ডোজ)। ইতোমধ্যে যারা ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার, প্রেগন্যান্ট নারী ও ষাটোর্ধ্ব যারা আছেন, তাদেরকে দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে এবং তাদেরকে দ্রুততম সময়ে নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।এছাড়াও কোমরবিডিটি রয়েছে এমন ব্যক্তিদের অবশ্যই প্রটেকটিভ কেয়ার যেমন- মাস্ক ব্যবহার করা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য যে বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ১৮ মার্চ আসে প্রথম মৃত্যুর খবর। এরপর থেকে দেশে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২০ লাখ ৩৭ হাজার ১৮ জন। তাঁদের মধ্যে মারা গেছে ২৯ হাজার ৪৩৮ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৭৮ শতাংশ বলে জানিয়েছে। শুক্রবার থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে সাতজন।
Comments
Post a Comment